ধরা যাক তার নামটা না হয় সূর্য ছিল রাখা –
শুধুই তো নাম, তাতে কি আর আসে এবং যায়?
আরও একটা নাম না হয় এমন করেই ধরি,
সে নাম না হয় ভাসতে থাকুক রূপসী রূপসায়!
আলাপ হল ছেলেবেলার স্কুলের সহজ পাঠে-
সে সব পড়া কী আর কারো অনেক দিন আর থাকে?
চার ক্লাসেতেই সহজ পাঠের তাই হয়েছে ছুটি,
দুটো জীবন, পৃথক পাঠের , কে আর মনে রাখে!
পড়াশোনা নিজের মতো আরও বছর ছয়-
আলাদা স্কুল, এগারো ঘর আসলে হঠাৎ দেখা,
পড়ার লড়াই স্কুলে স্কুলে, এক কিশোরের মনে,
চোখের দেখায় রূপসা আগের ঢেউ তুলে যায় একা!
নদী সে তো কতোই আছে ভালোবাসায় বয়-
রূপসা নদীর সে সব দিকে খেয়াল ছিল নাকি?
একলা স্রোতে শুধুই নদীর আপন খেয়াল মন,
কিশোর চোখে রূপসা বসে, উথাল পাথাল দেখি।
ইচ্ছেরা সব বড্ডো লাজুক রূপসা যেদিন বোঝে-
প্রেমের কিশোর ভোরের বেলায় ফুলের ডালি আনে,
একটা চিঠি ফুলের সাথে সিঁড়ির পরে রাখা,
‘ভালোবাসা তোর পায়েতে, চাইলে রাখিস মনে’!
হারিয়ে গেল ভালোবাসা রূপসা একাই বয়-
সুনীল আকাশ, সবুজ বাতাস, ডানায় ওড়া পাখি,
সেই কিশোরের চিঠিও হারায় দ্বন্দ্ব ক্ষণিক রেখে,
‘হারিয়ে আমি যাচ্ছি একা, থাকিস রে তু্ই সুখী’।
সূর্য ওঠে সূর্য ডোবে দিনের পরে রাত-
মাসের পরে বছর ঘোরে স্কুলের পাঠের শেষে,
আরও জ্ঞানের অমোঘ টানে রূপসা তখন একা,
এমনি করেই নদীর বুকে অন্য নাবিক আসে ।
ধরেই নিলাম নামটা না হয় চন্দ্র সদাগর-
সপ্তডিঙা উড়িয়ে পালে রূপসা বুকে এসে,
একই পানে ভাসতে চেয়ে নোঙ্গর করে তরী,
ইচ্ছে মনের ব্যক্ত করে অল্প কথার বেশে!
আমার নদী বড্ডো পাগল বইবে একা একা,
নিজের খেয়াল নিজের খুশি, বাঁধতে না চায় পথে,
দুয়ার খোলা সপ্তডিঙা, সওদাগরের আশা
হার মেনে যায়, রূপসা একাই ভাসে নিজের স্রোতে।
সব নদীরাই সাগর খোঁজে রূপসা শুধুই চলে,
গহীন বনের সবুজ বুকে অজানা এক পথ,
সূর্য চাঁদের বাঁধন পাশে হারতে নারি গতি,
ভালোবাসার শিকল যদি ভাঙে স্বপন রথ?
আমি চিনি রূপসা ধারা, আমায় সে আজ বোঝে,
তার চলার পথেই খোঁজ নিয়ে তাই দিব্যি আমি থাকি,
শেষ বিকেলের আলোয় এখন দু’দন্ড রোজ বসে,
আমি হিসেব মেলাই, রূপসা কথা মালায় গেঁথে রাখি।
রূপসা আমার ইচ্ছামতী আপন খুশির নদী-
রূপসা আমার সৃষ্টিছাড়া অবুঝ জলের ধারা-
রূপসা আমার নিয়ম ভাঙ্গা সহজপাঠের মন-
রূপসা আমার ভালোবাসা না যায় তাকে পড়া।
এমন কিছু রূপসা যদি তোমার খোঁজে থাকে,
আজও যারা এই কবিতায় বইছে কাছাকাছি,
গল্প তোমার আমায় লিখো খোলা পাতায় চিঠি,
পাঠিয়ে দিও আমার ডাকে, অপেক্ষাতেই আছি।