কবিতা

পাইনের শেষে

“পাইনের শেষে”যেখানে সীমানা থামে পাইনের সারি নামে, গায়ে গায়ে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে,যেখানে আমি ও তুমি, আমাদের স্মৃতিগুলো, আঙুলে আঙুল ছুঁয়ে ভালোবেসে ফুল হয়ে বেঁচে ,যেখানে অনেক পাখি সারাদিন ডাকাডাকি, কত কাজ, কত কথা বলে,আর শুধু একবার এ জীবন দূরে ফেলে আমি তুমি সেখানেই চল যাই চলে। যেখানে আকাশ জাগে, যে আকাশে রঙ লাগে, যে রঙের উপমা না হয়,যেখানে আমরা একা, বাকি সব ধুলোমাখা, অতীতের যত কথা চুপচাপ সব মুছে যায়,যেখানে বৃষ্টি আসে, টুপ্ টুপ্ জল খসে, পৃথিবীর অনাদি আদিম এক রূপে,চল যাই দু’জনেতে, রামধনু স্বপ্নতে, পায়ে পায়ে হেঁটে ফিরি ফেলে আসা সুখে। কবেকার রূপকথা, খুশি হাসি আর ব্যথা, মনে যারা পাপড়ি ছড়ায়,কবেকার ভিজে চুল, জুঁই বেল চাঁপা ফুল, এলোমেলো ছবি হাতড়ায়,কবেকার পাইন আর কুয়াশার সে পাহাড়, একা আমাদের সাথী হতে,চিঠি পাঠালো ডাকে, আমাকে ও তোমাকে, হারিয়েছ তুমি চোরা স্রোতে?যেখানে সীমানা থামে পাইনের সারি নামে, একবার চল বসি হাত রেখে হাতে।

পাইনের শেষে Read More »

ল্যাজ খসা হনু

চামড়া পিঠের লাল হতো রোজ হাতের তালু ফুলতো বেশ,সেই কারণেই হস্ত নামক অস্ত্র প্রয়োগ ঘটলো শেষ!এর ফলাফল আশাব্যঞ্জক এমন ভাবার কারণ কম,খুন্তি হাতা ডালের কাঁটা ঐ পিঠেতেই ফেলল দম।সকাল দুপুর তবলা বাজে ছাতের তলা পক্ষীহীন,চামড়া পিঠের গুটায় তবু আচার চুরির অন্ত ক্ষীণ।গ্রীষ্ম ছুটির লম্বা বেলা ধীর পায়েতে সন্ধ্যা হয়,বিজলি বাতির অভাব কিন্তু ভূতের ভয়ও বেবাক জয়!ঝড়ের রাতে আম তলাতে পকেট ভরে গুচ্ছ আম,ফিরলে নালিশ বাবার পালিশ পিঠই বালিশ চুকতো কাম।এমনি করেই চলছিল দিন এমনি করেই গড়ায় রাত,ভাবছো বুঝি দয়া মায়া কিছুই কি আর দেয় না সাথ?তবে তোমায় সত্যি বলি পড়তে বসে ঢুললে রোজ,রাতের বেলায় ঐ হাত আবার নরম হয়েই করতো খোঁজ।চোখে তখন ঘুমের নেশা খিদেও পেটে জবর খুব,ভাবি আমি নিজের থেকেই খাবার মুখে দেয় কি ডুব?গভীর রাতে দেহের ক্ষতে ধরলে জ্বালা মনের দুখ,হাত পাখা কি নিজের থেকেই আনতো বাতাস, শীতল সুখ?কোলের কাছে মিষ্টি সুবাস আলতো আদর আরাম চুল,আকাশ থেকে একাই নেমে আসতো ঘরে? এতই ভুল?মোটেই তা নয়, এখন বুঝি, দস্যিপণা অতীত আজ,মা রা সবাই এমনই হন, তাই তো হনুর খসলো ল্যাজ।

ল্যাজ খসা হনু Read More »

হারানো ভালোবাসা

ধরা যাক তার নামটা না হয় সূর্য ছিল রাখা –শুধুই তো নাম, তাতে কি আর আসে এবং যায়?আরও একটা নাম না হয় এমন করেই ধরি,সে নাম না হয় ভাসতে থাকুক রূপসী রূপসায়! আলাপ হল ছেলেবেলার স্কুলের সহজ পাঠে-সে সব পড়া কী আর কারো অনেক দিন আর থাকে?চার ক্লাসেতেই সহজ পাঠের তাই হয়েছে ছুটি,দুটো জীবন, পৃথক পাঠের , কে আর মনে রাখে! পড়াশোনা নিজের মতো আরও বছর ছয়-আলাদা স্কুল, এগারো ঘর আসলে হঠাৎ দেখা,পড়ার লড়াই স্কুলে স্কুলে, এক কিশোরের মনে,চোখের দেখায় রূপসা আগের ঢেউ তুলে যায় একা! নদী সে তো কতোই আছে ভালোবাসায় বয়-রূপসা নদীর সে সব দিকে খেয়াল ছিল নাকি?একলা স্রোতে শুধুই নদীর আপন খেয়াল মন,কিশোর চোখে রূপসা বসে, উথাল পাথাল দেখি। ইচ্ছেরা সব বড্ডো লাজুক রূপসা যেদিন বোঝে-প্রেমের কিশোর ভোরের বেলায় ফুলের ডালি আনে,একটা চিঠি ফুলের সাথে সিঁড়ির পরে রাখা,‘ভালোবাসা তোর পায়েতে, চাইলে রাখিস মনে’! হারিয়ে গেল ভালোবাসা রূপসা একাই বয়-সুনীল আকাশ, সবুজ বাতাস, ডানায় ওড়া পাখি,সেই কিশোরের চিঠিও হারায় দ্বন্দ্ব ক্ষণিক রেখে,‘হারিয়ে আমি যাচ্ছি একা, থাকিস রে তু্ই সুখী’। সূর্য ওঠে সূর্য ডোবে দিনের পরে রাত-মাসের পরে বছর ঘোরে স্কুলের পাঠের শেষে,আরও জ্ঞানের অমোঘ টানে রূপসা তখন একা,এমনি করেই নদীর বুকে অন্য নাবিক আসে । ধরেই নিলাম নামটা না হয় চন্দ্র সদাগর-সপ্তডিঙা উড়িয়ে পালে রূপসা বুকে এসে,একই পানে ভাসতে চেয়ে নোঙ্গর করে তরী,ইচ্ছে মনের ব্যক্ত করে অল্প কথার বেশে! আমার নদী বড্ডো পাগল বইবে একা একা,নিজের খেয়াল নিজের খুশি, বাঁধতে না চায় পথে,দুয়ার খোলা সপ্তডিঙা, সওদাগরের আশাহার মেনে যায়, রূপসা একাই ভাসে নিজের স্রোতে। সব নদীরাই সাগর খোঁজে রূপসা শুধুই চলে,গহীন বনের সবুজ বুকে অজানা এক পথ,সূর্য চাঁদের বাঁধন পাশে হারতে নারি গতি,ভালোবাসার শিকল যদি ভাঙে স্বপন রথ? আমি চিনি রূপসা ধারা, আমায় সে আজ বোঝে,তার চলার পথেই খোঁজ নিয়ে তাই দিব্যি আমি থাকি,শেষ বিকেলের আলোয় এখন দু’দন্ড রোজ বসে,আমি হিসেব মেলাই, রূপসা কথা মালায় গেঁথে রাখি। রূপসা আমার ইচ্ছামতী আপন খুশির নদী-রূপসা আমার সৃষ্টিছাড়া অবুঝ জলের ধারা-রূপসা আমার নিয়ম ভাঙ্গা সহজপাঠের মন-রূপসা আমার ভালোবাসা না যায় তাকে পড়া। এমন কিছু রূপসা যদি তোমার খোঁজে থাকে,আজও যারা এই কবিতায় বইছে কাছাকাছি,গল্প তোমার আমায় লিখো খোলা পাতায় চিঠি,পাঠিয়ে দিও আমার ডাকে, অপেক্ষাতেই আছি।

হারানো ভালোবাসা Read More »

error: Content is protected !!
Scroll to Top