কবিতা

অসম্পূর্ণ রাবণ

ঝন্টুকাকার হঠাৎ করে খেয়াল এল টাকের তলায়,গ্লাসের জলের উপরটুকু উনি খাবেন শেষের বেলায়রাতের পরে বিনিদ্র রাত চিন্তা যখন এলোমেলো,বুদ্ধি এল মাথার ভিতর, গ্লাস হল সব ফানেলগুলো। ব্যাঁকা দাদা সেদিন হঠাৎ সকালবেলায় ভীষণ ভেবে,খালি পেটে বিষম খেয়ে দাঁত খিঁচিয়ে উঠলো রেগে,সূর্য কেন সারাটা দিন মাথার পরেই ঢালবে আলো?ব্যাঁকাদা তাই খালি পায়ে শীর্ষাসনেই দিন কাটালো। ন্যাবা জেঠু খুবই কুঁড়ে কিন্তু ঘোরার দারুণ নেশা,গাধা ঘোড়ার চড়ার খরচ জেঠুর কাছে সর্বনাশা,অনেক হিসেব কষে শেষে রাজ্যে যত নাগরদোলায়,ন্যাবা জেঠুর আগাম বুকিং ঘোরার নেশা বগলদাবায়। সিংগীমামার ব্যাপক খিদে ঘন্টা গেলেই মোচড় মারে,পন্ডিতেরা বলেন শুনে এতো খেয়েই মানুষ মরে!প্রাণের মায়া বড়ই মায়া খাটিয়ে মাথা মামা এখন,দুই হোটেলের মাঝেই থাকেন , ডাবল গন্ধে পূর্ণ ভোজন। এদের উপরে ছিল আমার ঠাকুরদা আর দাদুর সারি,এবং ছিলেন ঠাকুমা আর দিদিমাদের মতন নারী,তাঁদের নানা চিন্তা এমন ঘুরতো মাথায় দিনে রাতে,সমাধানের বিচিত্র ঐ উপায়গুলোও বইতো সাথে। সেই বংশের ঝাড়ে আমি জন্ম নিলাম ভাগ্যগুণে,চিন্তা করার বাতিকরা তাই প্রথম থেকেই আমার জিনে,আধখ্যাচড়া চিন্তা শুধুই, উপচে পড়া চিন্তা মাথায়,ভাবছি আমার রাবণ মাথার বাকি ন’টা মিলবে কোথায়?

অসম্পূর্ণ রাবণ Read More »

তুমি

তুমি বলেছিলে, শ্রাবণের ঝিরিঝিরি সারাদিন বৃষ্টিতে মাটির উনুনে ধোঁয়ার গন্ধ ভালোবাসো তুমি,তুমি বলেছিলে, তপ্ত মাটিতে পড়া কালবৈশাখী জলের সোঁদা বাস তোমার কাছেই কতো দামী,ধান কাটা শেষ হলে খোলা মাঠে পূর্ণিমা গায়ে মেখে উড়ে যাওয়া যত আছে নিশাচর ডানা,তুমি বলেছিলে, তোমার ইচ্ছে হল তাদের গন্ধ গায়ে মেখে দু’দিনের পৃথিবীতে করে যেতে আনাগোনা;তুমি বলেছিলে, যে সুখে অশ্রু বয় ফল্গুনদীর মতো সেই সুখ বুকে নিয়ে পথ চলো তুমি,তুমি বলেছিলে, রিক্ত এ দুই হাত জোড় করে পড়ে পাওয়া যত কিছু ভালোবাসা সবকিছু অন্তরে নমি,আমার সাধ্য ক্ষীণ , এতো উপমার মাঝে তোমাকে খুঁজতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেছি আমি পথ,বলোনি যদিও তুমি তবু আমি আজ বুঝি, তোমার জন্য নয় আমার এ ক্ষুদ্র, সারশূন্য বস্তু জগৎ।

তুমি Read More »

বিসর্জন

তোর বাড়ির লাল দেওয়ালের পাশে,পোড়া ইঁটের রঙ লাল হয় তুই নিশ্চয়ই মানিস্!যখন দাঁড়িয়ে থাকতাম তোর অপেক্ষায়,নখের আঁচড়ে তোর নামই লিখেছিলাম, তুই কী জানিস্?আরে, অপেক্ষার আবার শেষ হয় নাকি?আমি জানি তুই ভাবিস এখনও এটাই মনে,আমিও একটা গাধার মতো দিন রাত এক করে-ওখানেই রেখেছিলাম নিজেকে নির্বাসনে।লালু, বিলে, নাটু বলেছিল অনেকবার,আমি নাকি ওদের ডন, ওদের অলিখিত গুরু,খামোখা এমন প্রেম রোগে পড়ে গেলে,আমার ইজ্জতের হবে এক্কেবারে শেষের শুরু।আমি আর কী করবো তুই বল,দিন রাত তুই আমার চোখে খালি ভাসিস্হাতের ছুরিটা ধার দিতে দিতে ভাবি,একে নিজের বুকেই বেধাবো যদি তু্ই নাই আসিস্।সাগরেদরা সব আড়ালে শুনেছি বলে,ওদের গুরুর ঠিক বারোটা বেজেছে প্রেমে,যে হাতে চাকু, ছুরি, লাঠি বেগে ছুটে মরে,সে হাত গোলাপে খামোখা নষ্ট হচ্ছে ক্রমে!আমি আর কীই বা করতে পারি?তোর দু’চোখে হারিয়ে ফেলেছিলাম যে পথ-এই মারকুটে চেহারা আর মুখের কাটা দাগে,শ্লা ভালোবাসার খিদে কোত্থেকে যে নিয়েছিল শপথ!তাও ধর টানা তিনটে বছর-আরও বেশিও হতে পারে, এখন আর মনে নেই অত,লাল দেওয়ালটার জায়গায় জায়গায় খুঁড়ে,বুক চিরে তৈরি হয়েছিল গুচ্ছের লম্বা ক্ষত।লালু, বিলে আর বাকি চ্যালা সবকটা,আস্তে আস্তে সরে গিয়েছিল আমায় ছেড়ে,ওদের আর কী দোষ দেব তু্ই নিজেই বল,তু্ইই তো আমায় ওদের হাত থেকে নিলি কেড়ে।দিদিমা একবার বলে ছিল ছেলেবেলায়-রত্নাকর না কী একটা ডাকাত বোধহয় ছিল,সে শ্লা তোর মতো কার একটা ভালোবাসায় পুড়ে,একদিন আমার মতো সাধুপুরুষ হয়ে গেল।কারো পোড়া মন আর সঙ্গে কপাল দোষ,কাটা দাগ আর বাড়েনি যদিও তারপরে,তোকে ভালোবাসার রেখাই শুধু গভীর থেকে গভীরতর হয়ে,আমার ললাটে জায়গা করে নিলো চিরতরে।একদিন যে রক্ত ঝরানো ছিল আমার নেশা,সেটাই দেখি এখন কষ্ট জাগায় চোখে,লাল দেওয়ালটা তেমনি দাঁড়িয়ে আছে ঠায়-আঁচড়গুলো সব ফিরিয়ে দিয়েছে একে একে।ভেবেছিলাম শেষ একবার হাতে নেবো ছুরি,বামে ডানে টানবো গলার কাছে-যেদিন চললি লাল চোলি তু্ই দূরে,আরে ধুর! তোর নয় রে, আমার কী সে ক্ষমতা আছে?আমি কী আর অতই খারাপ নাকি,যতটা তু্ই ভাবতি শুনে মনে চাবি দিয়ে,তবে ঐ রত্নাকর কুড়ুল ছেড়ে কেন কলম হাতে বসে,আমি তোকে চেয়েই জেনেছিলাম লাল গোলাপ নিয়ে।আরে দুঃখ কেন করিস? একটাই তো জীবন সবাই বলে,একলা কেটে যাবেই আমার কী বা যায় আর আসে,শুধু ভাবি ছুরি, চাকু, লাঠিগুলোরই ব্যর্থ হল বাঁচা,আমার মতোই বিসর্জনে ওরাও ভালোবেসে।

বিসর্জন Read More »

দ্বিতীয় সুখ

এক একটা দিনে, সময় চলতো পথ আমার এ জীবনেতে ক্ষণ গুনে গুনে,কষ্টরা বুকে, কুরে কুরে খেয়ে যেত হৃদয়ের অলিন্দ নিলয় চিনে চিনে,চাপ ধরা শ্বাস, ভুলে যেত আসা যাওয়া গায়ে মেখে নোনা ধরা বাস,উঁইয়ের ঢিবির মতো ধীরে ধীরে ঝুরঝুরে হতো এই মনে থাকা সব আশ্বাস;মনে হতো আলো , যেটুকু সামনে এলো চোখে এসে পুরোপুরি নিভলেই ভালো,চোখের তারায়, যা কিছু জমেছে এসে সব যেন নিমেষেই হয় পুড়ে কালো;মরণের জ্বালা , কেন যে মানুষ হয়ে বেঁচে বয়ে এ জীবনে চলা-হোক সব শেষ, চিতা বা মাটির নীচে কী বা যায় আসে, বৃথা সব বলা,এ পৃথিবীর সাথে, ফুরিয়ে গিয়েছে দিন হাতে হাত পা ফেলার পথে,জানি না কী ভাবে , এভাবেও জীবনকে ভালোবেসে তারই পিছে বয়ে যেতে যেতে-নতুন এ বেলা, উপলব্ধির ডালি খুলে বসে আমি আজ সাজাই এ মালা;বুঝিনি আগে, কিছু প্রাণ কিছু মনে আমিও যে এঁকে গেছি আবেগের খেলা-সে হৃদয়রা ছুঁয়ে, পুড়ে যাওয়া পৃথিবীর রূপগুলো সবুজের রঙে যাবে ধুয়ে,আমার এ মনে, যাদের চোখের আলো অবশেষে ভালোবেসে নিয়েছি যে সয়ে,আজ তাদেরই তরে, অনন্ত বাঁচার ইচ্ছে কেন জানি ঝড় হয়ে আছড়িয়ে পড়ে,শিকড়ে শিকড়ে , সে চাওয়াই নিজেকে ছড়িয়ে দিয়ে মাটিকেই আঁকড়িয়ে ধরে।অশ্বথ ছায়া হয়ে থাকে , আমিও তেমনি হব এ আশাই অকাতরে জমা হয় বুকে,শুধু ভাবি রয়ে যাব হাজার বছর , আর ফল্গুর বুকে ঢেউ বান হয়ে ভেসে যাক পদ্মার সুখে।

দ্বিতীয় সুখ Read More »

রাখি

ছোট্ট সে এক শব্দ এসে,বসলো একা জানলা পাশে,এই শ্রাবণের শেষের পথের পূর্ণিমাতে-অনেক দিনের সুপ্ত আশা,মনের কোণের ভালোবাসা,আনলো সাথে বৃষ্টিধারায় সিক্ত হতে।হাতের পরে হাতটা এসে,বাঁধবে যে প্রাণ সুতোর রেশে,তার কী মাপার সত্যি কোনো একক থাকে –ছোট্ট সুতোয় ভরসা থাকুক,কী আসে লোক নাই বা দেখুক,ভাইয়ের হাতে বোনের রাখির মর্যাদাকে।সম্পদেরও সীমা আছে,তুচ্ছ সেসব মনের কাছে,অনুভূতির গন্ডি কী আর যায় রে মাপা-হোক না দুটো জীবন মিলে,গভীর কোনো ছন্দ এলে,রাখির দিনে এই শ্রাবণে সেই যে দেখা!

রাখি Read More »

অচেনা সুখ

কাল শেষ রাতে,মিশে ছিল যে আর্দ্রতা বাতাসের সাথে-হিমের পরশে এসে ঘন হয়ে নেমে এলো ঘাসের ডগায়,শিশির বিন্দু হয়ে,জানেনি কেউ কখনো কী বুকে নিয়ে-ক্ষণকাল চোখ মেলে নিঃশব্দে সে কেন যে পৃথিবীর হৃদয়ে হারায়?একথাই ভেবে হারা কুল,এতদিন ধরে কেউ ধরায়নি সে ঠিক নাকি ভুল-হিমের পরশে এসে পৃথিবীর বুকে মিশে গিয়েছিল যে জলের কণা,সেই ফিরে এসে,সাগরের বুক হয়ে শেষ রাতে বাতাসেই মেশে-শিশির বিন্দু হয়, জীবন চক্রাকারে, জানি আমি তুমি বুঝবে না।অচেনা সে দুখ,অশ্রুর রূপে একা সারারাত ঝরিয়ে যে সুখ-হৃদয়ের মাঝে যা সাগরের ঢেউ হয়, মুছে দিয়ে যায় বেদনা,দুই বাহুডোরে,রাত শেষে ভালোবেসে কতদিন পেয়েছি যে তারে,পাওনি তুমি তা নিজে, দেখনি কখনো খুঁজে, জীবনের এ সুখ-যন্ত্রণা।

অচেনা সুখ Read More »

আচারওয়ালা

ইস্কুলের গেটের কাছেছিল এক আচারওয়ালা, বেতের খাঁচা-কাঠের টুলে খাঁচা বসে,আচারওয়ালা বেচে আচার, সেটাই বাঁচা!টিফিনের ঘন্টা পড়ারআগের সব ক্লাস গুলোতেই তার কী মজা,গেটের কাছে কৃষ্ণচূড়া-তার নীচে আচারওয়ালার জীবন সোজা;এমনটাই ভাবতো সবাই,জটিল সব অঙ্ক ক্লাসে ডিগবাজি খায়,টুলের উপর বয়াম ভরাআচারের খাঁচা তখন মুচকি তাকায়;আমি রোজ ছুটির পরে,জোটানো পয়সা জুড়ে আচার কিনি,সে খাবার এমনি যে স্বাদ,চোখ বেঁধে দিলেও তারে জিভেই চিনি;শাল পাতা পাতিয়ে তাতে,আচারের বয়াম হতে চামচ কেটে,আচারওয়ালা বেচতো আচার,টক ঝাল মিষ্টি বাহার, স্কুলের গেটে;‘কাকু দাও একটু আরও,চামচটা ঝাঁকিয়ে ধরো শালপাতাতে’এমনই কথার তোড়ে,অনুরোধ দাবি জোড়ে গেটের পথে;এরও পরে স্কুলের ছুটি,পকেটে থাকতো যদি দু চার আনা,সেদিনের রাজা আমি,সুখ সব জিভেই টানি নেই যে মানা;একবার ছুটির পরে,গোটা মাস সবাই ঘরে, শীতের ছুটি,এ কদিন আচারওয়ালাররাখেনি খোঁজ কোনো আর বয়ামকটি,এমনই ভেবে নিয়ে,এক ক্লাস এগিয়ে গিয়ে প্রথম দিনে,টিফিনের ছুটির আগেইতাকিয়ে দেখি গেটে আকুল মনে,কৃষ্ণচূড়ার তলেযেখানে তার রাজ্যখুলে থাকার কথা,বসতো সে রোজই এসেচাইতো মুচকি হেসে, শূন্য সেথা!এরপর প্রতিটি দিনআশা হয় ক্ষীণ আরও ক্ষীণ স্কুলের গেটে,সে কাকু আর আসেনাতার কথা কেউ বলেনা খাতা স্লেটে;এভাবেই দিন চলে যায়,আমি বড় গোঁফের রেখায় হতেই থাকি,আচারের বেতের খাঁচা,শালপাতা চেটেই বাঁচা, সবই ফাঁকি;সেদিনের বিকেল বেলা,সাঙ্গ পড়ার খেলা স্কুল বাড়িতে,খবরটা পেলাম কানেমন ধরে হ্যাঁচকা টানে মৃত্যুগীতে;আমার ঐ আচারওয়ালাযে নাকি তুলতো আচার শালপাতাতে,একমাস ছুটির ঘোরেবেচা কেনা বন্ধ করে ছাড়লো জীবন ধারদেনাতে ;বয়স তো আমার শুধুইএক দশ যোগ দুই দুই কীই বা জানি,জীবনের হিসেব নিকেশঘর আর মাঠেই তো শেষ, সেটাই মানি ;এরপরে দিন কেটে যায়আচারের বয়াম হারায় আমার চোখে,‘পায়েতে দাঁড়াও যদিতাহলেই জীবন নদী’ সবাই বলে বইবে সুখে ;পৃথিবীর ঘোরার তালে,ইস্কুল কোথায় ফেলে আমি এখন,সুট বুট টাই পরে নিইবড় বড় বক্তৃতা দিই যখন তখন;সবাই আমায় জ্ঞানী মানে,জগতের খবর জানে আমার কাছে,আমি তবু রাতের বেলা,খুঁজি নিয়ে চক্ষু খোলা , কোথায় গেছেআমার ঐ আচারওয়ালা?খাঁচা বয়াম সব জটলা পাকিয়ে বুকে,আমি আজ বড় হয়েও,ধার করে হৃদয় রাঙাই ভিজে চোখে।

আচারওয়ালা Read More »

আগুন পাখি

আগুন পাখির নাম শুনেছি মুখেতে তার অগ্নি জ্বলে,সূর্য নিজেও নিজের বুকে শুনেছি রোজ আগুন ঢালে;আগুন নাকি হৃদয় মাঝে ভালোবাসার শিকড় বাড়ায়,সেই আগুনের উত্তাপে রোজ মানুষ সুখের ফসল কুড়ায়;অনেক আগে পাথর যুগে আমরা যখন অগ্নি হারা,প্রতিকূল এই ধরিত্রীতে মানুষ ছিল ছন্নছাড়া,আগুন হাতের মুঠোয় পেয়ে দাবিয়ে নিলো এই পৃথিবী,তখন থেকেই সেই তো রাজা বাকিরা সব প্রজার ছবি!জ্বলবে আগুন নিভবে আগুন তোমার আমার ইচ্ছে মতো,এই ভয়েই কী থাকলো দূরে সূর্য নিয়ে আগুন যত?অহংকারের আগুন মনে এমনি করেই মেলছে ডানা?মানুষ নিজেই আত্মহারা তুচ্ছ করে জগৎখানা?সবই হল আগুন নিয়ে বুঝতে নারি সহজ কথা,আগুন যদি পোড়ায় জমিন পাখির কেন ডানায় ব্যথা?ফসল যদি জ্বলতে থাকে আগুন মানুষ জ্বালায় বনে,এতো বড় আকাশ পেয়েও জ্বালা কেন পাখির মনে?আবার ধরো শিখা ছাড়াই আগুন জ্বলে আমার বুকে,আগুন নেভার পরেও সেথায় আগুন কেন জ্বলেই থাকে?প্রশ্ন শুধুই অবিরত আমার মনে আসছে ভেসে,জ্বলছে আগুন আমার ডানায় দেখেও তুমি রইলে বসে?

আগুন পাখি Read More »

অসমাপ্ত

বিশ্বরূপের বাড়ি ছিলো বিশ্ববিণার পাশে,হাঁটতে শেখার বয়স থেকেই এ ওর বাড়ি আসে।বিশ্বরূপের বাবার ছিলো মস্ত জমিদারী,ঝরখা খুলে চাইলে শুধুই কাড়তো নজর গাড়ি।শান বাঁধানো উঠোন জুড়ে নতুন গাড়ির মেলা,আজকে এটা কিনলে ওটা কাল বেচাটাই খেলা।বিরাট বাড়ির অলিন্দতে টাকার ছিলো ঢেউ,চাকর বাকর আরাম অঢেল , মন খোঁজেনি কেউ। বিশ্ববিণার ছোট্ট বাড়ি গল্পে যেমন হয়,তার বাবাও তো মস্ত বড় সেটাই ছিল ভয়!অর্থ ঝুলি রইলো খালি সেসব কী শেষ কথা,মানুষ হবার পথটা মনে শিক্ষা শেখায় যেথা।প্রশ্ন অগাধ আলোর রূপে মোছে মনের কালি,বিশ্বজগৎ সেথায় চোখে বোলায় জ্ঞানের তুলি।ওদিকে সেই সাদা কালোর বোড়ের চালের দাবা,শুধু জমিদারীর হিসেব বোঝেন বিশ্বরূপের বাবা। এর পরেও তো গল্প থাকে জানতে কী আর মানা,সেদিন আকাশ ভীষণ নীলে যখন ভেজায় ডানা;নরম শিশির গোলাপ ফুলের পাপড়ি থাকে ছুঁয়ে,সবাই তখন সে ফুল হাতেই বিদ্যাদেবীর পায়ে;অঞ্জলি দেয় দুহাত জুড়ে আরাধনার তরে,সদ্য যুবক একটি হৃদয় হাত রাখে হাত পরে;কিশোরী এক সেদিনটাতেই মনের বেড়ি খুলে,ভালোবাসার তরী ভাসায় প্রেমসাগরের জলে। বিশ্বরূপের বাবা হলেন রাগেতে চণ্ডাল,জমিদারের ছেলের কেন এমনতর হাল?রাজার সাথে রাজার হবে আত্মীয়তার যোগ,অর্থহীনের স্বভাব খারাপ অর্থ চোষাই রোগ।দিনের আলোয় আঁধার ঢাকে বিশ্ববিণার বাড়ি,বাবা ছুটি নিলেন আগেই তাদের সাথে আড়ি;একলা মায়ের মাথার পাশে একলা মেয়ে রয়,জীবন তরী ঘূর্ণি টানে ডুবছে, জেনে ভয়! এখান থেকেই আমি না হয় গল্প বলি মিছে,স্বপ্ন দেখুক নতুন জীবন দুঃখ থাকুক পিছে।ফালি চাঁদের শেষ আলো যেই ডুবলো আকাশ পরে,নিকষ কালো অন্ধকারে ছোট্ট বাড়ি ভরে;সেই সময়েই হাতে নিয়ে একটু খানি আলো,বিশ্ববিণার ভালোবাসা তার কাছেতেই এলো।শিকল ছিঁড়ে হবু রাজা নতুন শিকড় পেতে,না হয় জীবন নতুন আঁকুক, থাকুক দুজন সাথে। আমি এবার আসি, এখন গল্প তোমার হাতে।তোমরা জোড়ো দু চার কলি, নতুন হৃদয়েতে।

অসমাপ্ত Read More »

error: Content is protected !!
Scroll to Top