কানে দুল ফোটানোর সমস্যা – কেলোয়েড

❓প্রশ্ন : কেলোয়েড কী?

✅ উত্তর : শরীর নিজের ত্বকের কোনো অংশের ক্ষত নিরাময়ের চেষ্টায় অতিরিক্ত সক্রিয় হতে গিয়ে সেই স্থানকে মাংসপিন্ডের মতো ফুলিয়ে ফেললে তাকে কেলোয়েড বলে।

❓ প্রশ্ন : কেলোয়েড কি তাহলে টিউমার?

✅ উত্তর : একদমই নয়। শুধু তাই নয়, ‘কসমেটিক’ বা দেখতে খারাপ লাগার মানসিক সমস্যা ছাড়া কেলোয়েড শরীরের কোনো ক্ষতিই করে না। শরীরের ক্ষত নিরাময় করতে ‘কোলাজেন’ নামে এক ধরণের প্রোটিন লাগে। এই কোলাজেন ক্ষত জায়গায় পৌঁছে সেই জায়গাকে আগের মতো স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। কিন্তু এটা করতে গিয়ে ভুলভাল করে ফেললেই ঐ জায়গা উঁচু হয়ে ফুলে যায়। এটাই কেলোয়েড।

❓ প্রশ্ন : কানে কেন কেলোয়েড হয়?

✅ উত্তর : কেলোয়েড কেন হয় তার যেমন নির্দিষ্ট উত্তর আজও জানা নেই তেমনি কান, মুখ, কাঁধ বা বুকেই কেন বেশি কেলোয়েড হয় সেটাও জানা যায়নি। কান যেহেতু প্রায় সব দেশের মেয়েদের ক্ষেত্রে দুল পরার জন্য ফোটানো হয় তাই মুখমন্ডলের মধ্যে কানের লতিতেই কেলোয়েড বেশি হয়। তবে এর সাথে বংশগত কারণ এবং গাঢ় রঙের ত্বকেরও যোগ আছে।

❓ প্রশ্ন : কানের কেলোয়েড হলে কি করবেন না?

✅ উত্তর :

১) প্রথম উত্তরটাই হল, একবিন্দু ভয় পাবেন না। কানের দুল ফোটানোর জায়গায় সর্ষে বা মটরশুটির দানার মতো শুরু হয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কেলোয়েড মার্বেল বা আরও বড় আকার নিতে পারে। এগুলো দেখতে সাধারণত গোলাকার হয়, কিছু ক্ষেত্রে নরম, কিছু ক্ষেত্রে শক্ত। এতে কোনো ব্যথা থাকে না তবে ওখানকার চামড়ায় একটা অস্বস্তি বা চুলকানি থাকতে পারে।

২) কোনোরকম ওষুধপত্র খেয়ে এটাকে ‘গলানোর’ পাগলামি করবেন না। ওষুধ খেয়ে ‘গলিয়ে’ দেবার তত্ত্ব নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করে মাথা ব্যথাই জুটবে ।

৩) সেঁক বা মলম লাগাবেন না। এতে কোনো লাভ নেই।

❓ প্রশ্ন : তাহলে কেলোয়েড নিয়ে কি করা উচিত?

✅ উত্তর :

১) প্রথমেই দুশ্চিন্তা কমাতে আপনার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে অসুখ সনাক্ত করুন যে এটা কেলোয়েডই। চিকিৎসকই আপনাকে বলে দেবেন যে এটি কোনো ক্ষতিকারক ‘বৃদ্ধি’ নয় এবং এর চিকিৎসা কোন ‘ইমার্জেন্সি’ নয়।

২) কানের কেলোয়েড খুব ছোট হলে বহুক্ষেত্রেই চিকিৎসা করার পরামর্শ দেওয়া হয় না, এর কারণ কানের লতির পিছনে, চুলের আড়ালে একে খুঁজে পাওয়া বাইরের কারো পক্ষে সম্ভব নয়। ‘কসমেটিক ভ্যালু ‘ না থাকলে একে না খোঁচানোই ভালো। চিকিৎসা শাস্ত্রের নিয়ম না মেনে এমন কিছু করতে গেলেই সেই খোঁচাখুঁচির জায়গার কোলাজেন আরও সক্রিয় হয়ে কেলোয়েডকে বাড়িয়ে দিতে পারে।

৩) কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসক খুব ছোট কেলোয়েডের ভিতরে নির্দিষ্ট ‘স্টেরয়েড’ ইনজেকশন ‘ডায়াবেটিস’ রোগীর ইনসুলিন নেবার সিরিঞ্জ দিয়ে সপ্তাহে একবার করে মোটামুটি চার থেকে ছয় সপ্তাহ দেন। এতে কেলোয়েড প্রায় মিলিয়ে যায়। তবে এ চিকিৎসা একদম শুরুর দিকেই করা উচিত।

৪) কেলোয়েড বড় হয়ে গেলে এবং রোগী একে বাদ দিতে চাইলে কানের ঐ অংশকে অবশ করে কেলোয়েডকে খুব ‘যত্ন’ করে নাক কানের চিকিৎসক কেটে ফেলেন এবং কয়েকসপ্তাহ পর থেকে আগে যেভাবে বলা হয়েছে সে ভাবেই ইনজেকশন দিয়ে আবার কেলোয়েড হওয়াকে আটকে দেন।

❓ প্রশ্ন : কেলোয়েড যাতে না হয় তার জন্য কি করণীয়?

✅ উত্তর : সেই অর্থে কিছুই করার নেই। তবে দুল পরার জন্য কান ফোটাতে চাইলে বয়স যত কম হয় ততই ভালো, কারণ শরীরের এই সব উল্টোপাল্টা ‘রি-অ্যাকশন’ বয়স বাড়লেই বেশি হয়।

❓ প্রশ্ন : তাহলে কি কান ফোটাতে চিকিৎসকের কাছেই যাওয়া উচিত?

✅ উত্তর : এর কোনো মানেই নেই। অনেক নাক কান গলার চিকিৎসক দুল পরার জন্য কান ফোটাতেই চান না। কেলোয়েড যদি হবার হয় তবে বাড়িতে মা, ঠাকুমা, দিদিমা বা ‘বিউটি পার্লারের’ কর্মী অথবা চিকিৎসক – যে কারোর কাছে কান ফোটালেই সে ঠিকই হাজির হবে। একটা বিষয়ই শুধু কান ফোটানোর সময় বিবেচ্য- যথা সম্ভব জীবাণুমুক্ত পদ্ধতি যেন মেনে চলা হয়।

এ লেখার শেষে একটাই উপদেশ দেওয়া যেতে পারে। সেটা হল, কেলোয়েড নিয়ে কেউ মাথা খারাপ করবেন না। এমন সমস্যা হয়েছে ভাবলে আপনার কাছের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

+1
0
+1
0
+1
1
+1
0
+1
0
+1
0

drsajalsur

কবিতা

ঝন্টুকাকার হঠাৎ করে খেয়াল এল টাকের তলায়,গ্লাসের জলের উপরটুকু উনি …

তুমি বলেছিলে, শ্রাবণের ঝিরিঝিরি সারাদিন বৃষ্টিতে মাটির উনুনে ধোঁয়ার গন্ধ …

তোর বাড়ির লাল দেওয়ালের পাশে,পোড়া ইঁটের রঙ লাল হয় তুই …

ছোটগল্প

বিনসা রোজ বেরোয় বেশ ভোরে। ঋষপের মোনাস্ট্রির ঠিক উল্টো দিকে …

একপেট ভাত খেয়ে দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে জানালা দিয়ে ভেসে …

আমি গ্রামের দিকে যাই সপ্তাহান্তে। সেখানে গাছপালা খুবই বেশি। তাল, …

error: Content is protected !!
Scroll to Top